আমার মা বেশিদূর পড়ালেখা করেননি। তবে তিনি পড়ালেখার মর্মটা খুব ভালভাবেই বুঝতেন। যতো কষ্টই হোক না কেন, তিনি সব রকমের চেষ্টা চালিয়ে যেতেন আমাকে পরিপূর্ণরূপে শিক্ষিত করার জন্য। তার সীমাহীন আদর মমতায় বেড়ে উঠে তখন আমি তখন ক্লাস থ্রি-তে। মায়ের ভালবাসা কাকে বলে তখনও আমি বুঝতাম না। সন্ধ্যা হলেই মা আমার হাতে ভাতের বাটি তুলে দিয়ে পাঠিয়ে দিতেন শিক্ষকের বাড়ি। আমাকে পাঠানোর পরপরই মা বাড়ির ভিতরে চলে যেতেন। কারন, মাকে ছেড়ে আমি অন্য কোথাও যেতে চাইতাম না। বড় হয়ে দাদির কাছে জানতে পারি, যখন আমি একটু দূরে যেতাম, মা রাস্তার পাশে এসে দাড়াতেন এবং চেয়ে থাকতেন ততক্ষন, যতক্ষন আমাকে দেখা যেত। এখন আমি অনেক বড়। জননী মমতাময়ী, গ্রামীন জনপদ আর প্রিয় সব মানুষদের থেকে অনেক দূরে এসে এখন আমি দিনযাপন করছি ইট পাথরে গড়া শহুরে রঙিন পরিবেশে। এখানে প্রাণী আছে, প্রান নেই। প্রাণের অস্তিত্ব মিশে আছে বুঝি মায়ের কাছেই। প্রতিদিনই মায়ের পাশে থাকার অভাবটা অনুভব করি। বহুদিন পরে তার কাছে ফিরে গেলেই বুঝতে পারি, তার সেই চোখ জোড়া এখনো সেই আগের মতোই আছে। আজকের এমন দিনে মাকে খুব মিস করছি। অনেক ভালোবাসি তোমায় মা। প্রতিনিয়ত তোমার প্রতি শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় অবনত হই মানুষ হবার প্রত্যেকটি পদক্ষেপে, যেখানে তোমার আদরমাখা শীতল পরশগুলো মিশে আছে ছায়ার চাদর হয়ে।