গুগল কেন নিষিদ্ধ করলো হুয়াওয়ে কে?

গুগলের নিষেধাজ্ঞায় হুয়াওয়েতে বন্ধ অ্যান্ড্রয়েড। হুয়াইয়ের সঙ্গে ব্যবসায়ীক সম্পর্ক ছিন্ন করলো যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অ্যান্ড্রয়েড প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান গুগল। এর ফলে হুয়াইয়ের নতুন ফোনগুলোতে অ্যান্ড্রয়েডের অনেক সুবিধাই পাওয়া যাবে না।

হুয়াওয়ের যেসব ফোন এখন বাজারে আছে সেগুলোতে অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম পাওয়া যাবে। কিন্তু হুয়াওয়ের নতুন যেসব মডেল বাজারে আসবে সেগুলোতে অ্যান্ড্রয়েড থাকবে না। ফলে ব্যবহারকারীরা ইউটিউব, জিমেইল ও গুগল ম্যাপের মতো জনপ্রিয় অ্যাপগুলো ব্যবহার করতে পারবেন না।




আমাদের বাংলাদেশে মোবাইল ফোনের টাওয়ার সহ নেটওয়ার্কিং এর যেসব যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়, তার ৯০% হুয়াওয়ের।
শুধু আমাদের দেশ না, পৃথিবীর ১৭০ টা দেশের নেটওয়ার্কিং এর যন্ত্রপাতি কেনা হয় হুয়াওয়ে থেকে। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ৫০টা টেলিকম অপারেটরের মধ্যে ৪৫টা ব্যবহার করে হুয়াওয়ের যন্ত্রপাতি। শুধুমাত্র ২০১১ সালের হিসেব অনুযায়ী পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার তিনভাগের এক ভাগ মানুষ কোনো না কোনোভাবে হুয়াওয়ের কনজিউমার। এই সংখ্যাটা পরবর্তীতে আরো বেড়েছে, কমেনি।
হুয়াওয়ে হচ্ছে ওয়ার্ল্ড বিগেস্ট টেলিকম ইকুইপমেন্ট মেইকার। এই ব্যবসায় তাদের একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী বলা যায় আরেক চাইনিজ কোম্পানী ZTEকে। যারা হুয়াওয়ের জিনিস কিনেনা, তারা ZTE থেকে কিনে।

হুয়াওয়ে সেকেন্ড লার্জেস্ট টেলিভিশন চিপ নির্মাতা কোম্পানী।
প্রথম 5G টিভি আনার ঘোষণা দিয়ে তারা স্যামসাং এবং অ্যাপলের টিভি ব্যবসাকে বিপদে ফেলে দিয়েছে। একই সংগে এই টিভি 8K রেজ্যুলেশন এবং 360 ডিগ্রী ভিউ। যা দিয়ে দর্শক যেকোনো দিক থেকে টিভি দেখতে পারবে।

বলা বাহুল্য, হুয়াওয়ে পৃথিবীর প্রথম কোম্পানী হিসেবে সফলভাবে 5G নেটওয়ার্ক এনেছে।

হুয়াওয়ের নেটওয়ার্কিং এবং ইলেক্ট্রনিকস ছাড়াও আমরা যেভাবে হুয়াওয়েকে চিনি, সেটা হচ্ছে মোবাইল বা স্মার্টফোন দিয়ে।
২০১৮ সালে অ্যাপলকে পেছনে ফেলে দ্বিতীয় বৃহত্তম স্মার্টফোন নির্মাতা হিসেবে নিজেদের জায়গা করে নিয়েছে হুয়াওয়ে। প্রথম অবস্থানে আছে স্যামসাং। গবেষকরা বলছেন ২০২০ এর মাঝামাঝি সময়ের আগেই স্যামসাংকে পেছনে ফেলে প্রথম স্মার্টফোন নির্মাতা হবে হুয়াওয়ে। যদিও সেই অগ্রযাত্রা এখন হোঁচট খেয়েছে। সেটাতে পরে আসছি।
ভাঁজ করা যায় এমন স্মার্টফোন প্রথম যে দুটি কোম্পানী এনেছে, তারা হচ্ছে যথাক্রমে স্যামসাং এবং হুয়াওয়ে।
এই দুটি কোম্পানী ফোল্ডেবল স্মার্টফোন আনার জন্য গবেষণা চালাচ্ছিল বেশ কয়েক বছর ধরে।

যদিও তাড়াহুড়ো করে হুয়াওয়ের এক সপ্তাহ আগে রিলিজ হওয়া স্যামসাং এর ফোনটি কিছুদিনের মধ্যেই মার্কেট থেকে তুলে ফেলা হয়েছে। এতে যথেষ্ট সমস্যা ছিল। ফোল্ডেবল দুটি ফোনের মধ্যে হুয়াওয়েরটাই উন্নত এবং পারফেক্ট।

মোবাইল ফোনের রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট (R&D) খাতে হুয়াওয়ের ইনভেস্ট অন্য যেকোনো কোম্পানীর চেয়ে বেশী।
২০১৮ তে তারা এই খাতে বাজেটে স্যামসাংকে ছাড়িয়ে যায়। এর আগে পর্যন্ত সবচেয়ে বেশী বাজেট ছিল স্যামসাং এর। ২০১৮ তে স্যামসাং সিদ্ধান্ত নেয় তারা মোবাইলের গবেষণা খাতে আর টাকা ব্যয় করবেনা।
এখনো পর্যন্ত R&Dর জন্য সবচেয়ে বেশী ব্যয় করে এই দুটি কোম্পানী। এটি শুধুমাত্র স্মার্টফোনের কথা বলছি।
টোটাল R&D স্পেন্ডিং এর মধ্যে শীর্ষে ছিল এপল আর স্যামসাং তারা ১১ বিলিয়ন এবং ১৩ বিলিয়ন করে ব্যয় করতো। তারপর হুয়াওয়ে এক নাম্বারে চলে আসে যখন তারা বাজেট বাড়িয়ে ২০ বিলিয়নে নিয়ে যায়। চাইনিজ কোম্পানী হওয়ার কারণে কাজ অনুপাতে অন্য দুটি কোম্পানীর চেয়ে হুয়াওয়ের ব্যয় কম।

স্মার্টফোন, টিভি, নেটওয়ার্কিং এসব ব্যবসায় হুয়াওয়ের এক আধিপত্যের কারণে ইউএসের পশ্চিমের কোম্পানী গুলো ব্যবসা প্রায় করতেই পারছেনা।
হুয়াওয়ের বিকল্প খুঁজে না পাওয়ার প্রধান দুটি কারণ হচ্ছে-
  • ১. ওদের মত কোয়ালিটি অন্য কেউ দিতে পারছেনা।
  • ২. ওদের মত সস্তায় অন্য কোনো কোম্পানী দিতে পারছেনা।


এই দুটি কারণে ওরা হয়ে উঠেছে অপ্রতিদ্বন্দ্বী।

এবার আসি মোবাইল ফোন ব্যবসার মধ্যে। এতদিন আইফোন আর স্যামসাং যেখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতো, সেখানে মাত্র কয়েক বছরে বড় প্লেয়ার হিসেবে মাঠে ঢুকে পড়ে হুয়াওয়ে। এবং গত বছর তারা অ্যাপলকে পিছনে ফেলে দ্বিতীয় অবস্থানে চলে আসে।

স্যামসাং যদিও আমেরিকান কোম্পানী নয়, তারপরও তারা সেখানে অ্যাপলের মতই সমাদর পায়। এর কারণ হচ্ছে সাউথ কোরিয়া।
সাউথ কোরিয়াকে বলা হয় আমেরিকার আন অফিশিয়াল স্টেট। না না, এখনই তেড়ে আসার দরকার নেই। এটা শুধু শুধু বলা হয় না, এরপেছনে যথেষ্ট কারণ আছে। সাউথ কোরিয়া হচ্ছে ইউএস ব্যাকড স্টেট। যাদেরকে ইউএস প্রটেক্ট করে। সাইথ কোরিয়াতে ইউএস মিলিটারী, নেভী এবং এয়ারফোর্সের সংখ্যা প্রায় ৩৩ হাজার। তারা সবকিছুই করে যৌথভাবে। তাদের সামরিক নীতি, পররাষ্ট্রনীতি এসবও ঠিক করে ইউএস। অনেকটা এডভাইজর এবং গার্ডিয়ানের মত।
ইউএস কতৃক যথেষ্ট সাপোর্ট তারা পায় প্রায় সব কিছুতে। এবং সাউথ কোরিয়াকে একটি খ্রিস্টান প্রধান দেশই বলা যায়।

সাউথ কোরিয়ান কোম্পানী স্যামসাং ইউএসের জন্য সমস্যা না। সমস্যা হচ্ছে চাইনিজ কোম্পানী গুলো। বিশেষ করে সেটা যদি হয় টেলিকমিউনিকেশনস প্রোডাক্ট।
ইউএস সাধারণত দুনিয়ার সবার উপর নজরদারী চালায়, এমনকি তাদের বন্ধুরাষ্ট্রের প্রধানদের উপরও। যেটা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ এবং এডওয়ার্ড স্নোডেনের ফাঁস করা তথ্য থেকে জানা যায়।

ইউএস সরকার জানে আপনি কার সাথে কথা বলছেন, কীভাবে চিন্তা করেন, কার সাথে ডেট করেন, কোথায় যান, কোথায় ঘুমান।
অ্যান্ড্রয়েড, গুগল, ফেইসবুক এসবের কারণে এটা সবচেয়ে সহজ এখন।

Huawei vs Google Funny | jihadkhan.com


কিন্তু সমস্যা হচ্ছে কোম্পানীটি যদি আপনাদের নিজেদের না হয়? বা আপনার প্রতিদ্বন্দ্বী কিংবা কোনো শত্রুদেশের হয়?
তাহলে আপনি তো ওদের ডিভাইস গুলো থেকে তথ্য পাচ্ছেনই না, আবার রিস্ক থাকছে ওরা আপনারই তথ্য পেয়ে যাচ্ছে।
আপনি নিজে যখন চুরি করেন, তাহলে আপনি জানেন যে একই জিনিস দিয়ে অন্যজন কীভাবে চুরি করবে।
তার উপর সেই কোম্পানী যদি জায়ান্ট হয়ে উঠে, আপনার কোম্পানী তো ব্যবসায়ই করতে পারছেনা। সব দিক দিয়েই লস।
তাহলে কী করবেন? এমন ব্যবস্থা করবেন, যাতে তারা ব্যবসা করতে না পারে। ট্যাক্স বাড়িয়ে লাভ নাই, কারণ ওটা আপনার জনগণই তাদের হয়ে পে করছে। তাহলে কী করতে হবে? কোম্পনীটিকে করতে হবে নিষিদ্ধ।
এমনটিই হয়েছে চাইনিজ অন্য একটি কোম্পানী জেডটিইর সাথে। ২০১৮ সালে আমেরিকা ZTEকে ব্ল্যাকলিস্টেড করে।
নেটওয়ার্কিং ব্যবসার বাইরে মোবাইল ব্যবসাতেও দারুণ উদ্ভাবন করছিল ZTE. তাদের স্মার্টফোন ব্র‍্যান্ড Nubiaর ফোন গুলো দেখলেই সেটা বুঝতে পারবেন।
এখন যে বিভিন্ন কোম্পানী ফুল স্ক্রীন ডিসপ্লে শুধু রিয়ার ক্যামেরা দিয়ে ফোন বানাচ্ছে, এমন ফোন আরো এক বছর আগেই এনেছে Nubia.
তাদের Nubia X ফোনটির সাথে যদি আপনি পরিচিত হয়ে থাকেন, তাহলে দেখবেন এটি অসাধারণ উদ্ভাবন। এই ফোনটির দুটি ডিসপ্লে, একটি ডিসপ্লে পেছনে। মজাত ব্যাপার হচ্ছে ডিসপ্লেটা অন না করা পর্যন্ত বুঝাই যায়না যে এটি ডিসপ্লে।

২০১৯ এ এসে হুয়াওয়ে ইউএসএতে ব্ল্যাকলিস্টেড হয়। এতদিন যে আমেরিকাতে হুয়াওয় ব্যবসা করে পারতো, এমনটা কিন্তু না। এখন যেটা করেছে, হুয়াওয়ের সাথে ইউএসএর কোনো ফার্ম ব্যবসা করতে পারবেনা।
ইউএসের মার্কেট ছাড়াই হুয়াওয়ের স্মার্টফোন এই অবস্থানে এসেছে। ইউএসের মার্কেট থাকলে আরো আগেই এক নাম্বারে চলে আসতো তারা।

প্রাচীন সমাজের আদলে তখনকার সমাজপতিদের মত আমেরিকা তার প্রতিদ্বন্দ্বীদের সাথে না পারলে এক ঘরে করে রাখার সিস্টেমেই চলছে।
আমেরিকার পরামর্শ উপেক্ষা করে ইউরোপ যখন হুয়াওয়েকে তাদের দেশে ব্যবসা করার অনুমতি দিচ্ছে, তখনই তাড়াতাড়ি করে হুয়াওয়েকে নিষিদ্ধ করে দিল আমেরিকা। আমেরিকার সবচেয়ে কাছের মিত্র ব্রিটেন হুয়াওয়েকে নিষিদ্ধের ব্যাপারে এখনো কোনো মন্তব্য করছেনা। আদৌ নিষিদ্ধ করবে কিনা, সেটাও বলা যাচ্ছেনা।
বৃটিশদের স্ট্র‍্যাটেজি হচ্ছে-
  • “If you cannot beat them, join them.”
এই ব্যাপারেও সুযোগ বুঝে কোপ দেবে ব্রিটেন।

আমেরিকার নিষেধাজ্ঞার ফলে গুগলের সাথে আর ব্যবসা করতে পারবেনা হুয়াওয়ে। এই কারণে তাদের পরবর্তী ফোন গুলোতে এন্ড্রয়েডের গুগল সার্টিফিকেট পাবেনা আর।
এন্ড্রয়েড যেহেতু ওপেনসোর্স, তাই চাইলে যে কেউ সেটি নিয়ে ব্যবসা করতে পারে। কিন্তু জিমেইল, গুগল ম্যাপ এবং ইউটিউব যেহেতু ওপেনসোর্স নয়, তাই হুয়াওয়ের পরবর্তী ফোন গুলোতে আর এসব দিতে পারবেনা তারা।
তবে যে ফোন গুলো মার্কেটে ইতিমধ্যে চলে এসেছে সেই সব ফোন গুলোতে সব ঠিকঠাক মত চলবে, এইসব অ্যাপেরও ঠিকঠাকমত আপডেট পাওয়া যাবে।
হুয়াওয়ে আজকেই জানিয়েছে তারা তাদের গ্রাহককে নিয়মিত সিকিউরিটি আপডেট দিয়ে যাবে। যে সেটগুলো মার্কেটে আছে এবং যে সেটগুলো এখনো স্টোরে আছে বিক্রি হয়নি, সবগুলোতেই গুগল সার্টিফিকেট থাকায় সব সুবিধা ঠিকঠাক মত পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হবেনা।
শুধুমাত্র এন্ড্রয়েডের নেক্সট ভার্সন আপডেট পাওয়া যাবেনা। নেক্সট ভার্সন আপডেট আর সফটওয়্যার আপডেট একই জিনিস নয়। নেক্সট ভার্সন মানে হচ্ছে আপনার যদি এন্ড্রয়েড ভার্সন ৮ থাকে, তাহলে আর ৯ পাবেন না। আর ৯ থাকলে পরবর্তী আপডেট ১০ পাবেন না।

হুয়াওয়ের ফোন গুলো যারা ইউজ করেছেন, তারা জানেন হুয়াওয়ে ফোন গুলো কেমন ক্লিন আর স্মুথ। ফোনের অনেকগুলো ফিচার হুয়াওয়ের ইনভেন্ট করা। এন্ড্রয়েডের উন্নতিতে হুয়াওয়ের অবদান অনস্বীকার্য। লং স্ক্রীনশট, স্প্যামার ডিটেক্ট এন্ড ব্লক, একাধিক ক্যামেরা, কুইক ক্যামেরা এসবও দেখিয়েছে হুয়াওয়ে।
এমনকি স্যামসাং এর S10+ এ দেয়া পাঞ্চহোল কিন্তু হুয়াওয়ে তাদের Honor view 20 তে গতবছর দিয়েছে।
আর ফোনের নেটওয়ার্ক এর জন্য হুয়াওয়ের সবসময়ই সেরা। কোনো ফোনে যখন সিগন্যাল পাওয়া যায়না, তখনো হুয়াওয়েতে সিগন্যাল থাকে। এটা হয়তো তাদের নেটওয়ার্ক ইকুইপমেন্ট এর কারণে।

হুয়াওয়ে জানতো একদিন তাদেরকে উইন্ডোজ এবং এন্ড্রয়েড ইউজ করতে দেয়া হবেনা। এজন্য তারা বেশ কয়েক বছর আগে থেকে নিজেদের অপারেটিং সিস্টেম (OS) ডেভেলপিং করে যাচ্ছিল। ২০১৮র ডিসেম্বরে ঘোষণা দিয়েছিল এই ওএস রেডি। এটা প্ল্যান বি হিসেবে রেখেছে তারা।
দেখা যাক তাদের নতুন ওএস কেমন হয়।

চীনে যেহেতু গুগলের সব সার্ভিস নিষিদ্ধ, আমেরিকারও উচিৎ চীনা ফোন গুলোতে আমেরিকার সার্ভিস বন্ধ করে দেয়া।
এইদিক থেকে হিসাব করলে ঠিকই আছে।

আমেরিকানরা যে অভিযোগ করছে চীন তাদের ডিভাইস দিয়ে গুপ্তচর বৃত্তি করছে, কথাটা চাইনিজ কোম্পানী গুলো অস্বীকার করলেও তাদেরকে বিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই।
কারণ চাইনিজ প্রত্যেকটি কোম্পানী তাদের তথ্য সরকারকে দিতে বাধ্য। নাহয় সেখানে তারা ব্যবসা করতে পারবেনা। চীন কোনো গণতান্ত্রিক বা নাগরিক অধিকারের দেশ নয়।

কথা হচ্ছে আপনার আমার উপর গুপ্তচরবৃত্তি সবাই করছে। আমেরিকান কোম্পানী গুলোকে দিয়ে আমেরিকানরা করছে, চীনা কোম্পানীকে দিয়ে চীনারা করছে, রাশিয়ান কোম্পানী গুলো দিয়ে রাশিয়ানরা করছে।
তবে চীন রাশিয়াতে তাদের সরকার যতটা সহজে তথ্য পেতে পারে, মার্কিন সরকার এত সহজে তথ্য পেতে পারেনা। যেমন গুগল এবং ফেইসবুক সহজে সরকারকে তথ্য দিলেও অ্যাপল এবং টুইটার দেয় না।
নিশ্চয় মনে আছে একজন নিহত টেরোরিস্টের আইফোনের লক খুলে দেয়ার জন্য এফবিআই অ্যাপলকে অনুরোধ করেছিল, অ্যাপল খুলে দেয়ার বদলে আদালত দেখিয়ে দিয়েছিল।
পরে আদালতে এফবিআই হেরে গিয়েছিল, অ্যাপল আর সেই লক খুলে দেয়নি।

আমেরিকার এই ব্যানের কারণে হুয়াওয়ায়ে একটা হোঁচট খাবে নিশ্চিত, তবে এই টেলিকমিউনিকেশন জায়ান্ট কীভাবে সামলে উঠে সেটাই এখন দেখার বিষয়।
কিন্তু মজার বিষয় হচ্ছে, আপনি হুয়াওয়েকে যতই অপছন্দ করেন, কোনো না কোনোভাবে আপনি হুয়াওয়ের ইউজার। হতে পারে সেটা আপনার টিভির ভেতরের চিপ হুয়াওয়ের কিংবা আপনার মোবাইলের নেটওয়ার্ক।
হুয়াওকে আপনি অপছন্দ করতে পারেন, কিন্তু কনজিউমার হওয়া থেকে নিজেকে এড়াতে পারেন না।
নবীনতর পূর্বতন