দেহের ওজন বৃদ্ধি পেলে কি করনীয়ঃ জেনে নিন

দেহের ওজন বৃদ্ধি পেলে কি করনীয়ঃ জেনে নিন

সমস্যা থাকবেই, তাই বলে ভেঙ্গে পরলে চলবেনা। কারণে কিংবা অকারণে ওজন বৃদ্ধি পাওয়াটা দেহের জন্য অনেক পরিচিত একটি সমস্যা। অনেকের দেহের ওজন বৃদ্ধি পায় নির্দিষ্ট কোন কারণে আবার অনেকের ওজন অকারণেই বৃদ্ধি পেয়ে থাকে।

তবে ওজন বৃদ্ধি পাওয়াটা আমাদের সকলের দেহের জন্যই বড় যন্ত্রণা। ওজন বৃদ্ধি পেলে যেমন দেখতে ভালো লাগেনা পাশাপাশি আমাদের দেহের জন্যও বাড়তি ওজন খুবই ক্ষতিকর। কিন্তু আমরা অনেকেই আছি যারা ওজন নিয়ে খুব বেশি চিন্তিত থাকি। কিছুটা ওজন বৃদ্ধি পেলেই আমরা পেরেশান হয়ে যাই। তাই পেরেশান না হয়ে জেনে রাখুন ওজন বৃদ্ধি পেলে কি করনীয়ঃ

প্রথমেই ওজন কমানোর জন্য মনস্থির করতে হবে। একটি নির্দিষ্ট দিন থেকে শুরু করার জন্য মনস্থির করুন। যেদিন থেকে শুরু করবেন সেদিনের ওজন নোট করে রাখুন।

ঘুম থেকে উঠে প্রতিদিন খালি পেটে এক গ্লাস পানি (সাথে এক চামুচ মধু ও লেবুর রস মিশিয়ে নিতে পারেন) খেয়ে ৩০-৪০ মিনিট হাটুন।

ওজন কমাতে শরীর চর্চার উদ্দেশ্য হলো ক্যালোরি পুড়ানো, কতটুকু ক্যালোরি খরচ হলো তা নির্ভর করে আপনার শরীরচর্চার পরিমাণ ও কত সময় ধরে করলেন তার ওপর। সবচেয়ে ভালো সহজ উপায় হলো ছোটখাটো শারীরিক তত্পরতা আপনি বাড়াতে পারেন—লিফটে না উঠে সিঁড়ি বেয়ে উঠুন, গাড়িটা বাদ রেখে আশপাশের বাজারঘাট, অফিস হেঁটেই যান।

খাদ্যাভাসে কিছু পরিবর্তন আনুন, যাতে কিনা আপনার খাদ্যে ক্যালোরির পরিমাণ কমে যায়। কিন্তু মনে রাখতে হবে ক্যালোরি কমাতে আপনার খাদ্যের রুটিন, তৃপ্তি ও খাদ্য তৈরির সহজ পদ্ধতির কোনোটিই যেন ব্যাঘাত নাঘটে। সবচেয়ে ভালো পথ হলো, আপনি বেশি বেশি করে উদ্ভিদ খাদ্য, যেমনঃ ফল, সবজি এবং আঁশজাতীয় খাদ্য খান। সব সময় সচেষ্ট থাকুন যেন আপনার খাদ্য বৈচিত্র্যময় হয় এবং রুচি ও পুষ্টি অপরিবর্তিত থাকে।

অতিরিক্ত লবণ খাওয়া পরিহার করতে হবে। কারণ, লবণ শরীরের ওজন বাড়াতে সাহায্য করে।

দুধযুক্ত খাবার, যেমন :পনির, মাখন এগুলো পরিহার করতে হবে। কারণ, এগুলো উচ্চ চর্বিযুক্ত। সঙ্গে মাংস ও আমিষজাতীয় খাবারও নির্দিষ্ট পরিমাণে খেতে হবে। উচ্চ শর্করাসমৃদ্ধ খাদ্য, যেমন—চাল, আলু অবশ্যই নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় খেতে হবে। আর গম (আটা) খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।

সম্পূর্ণরূপে অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় বর্জন করুন। অবশ্যই দৈনিক ৩-৭ লিটার পানি পান করতে হবে। লেবু পানি, সোডা পানি, কফি, চা ইত্যাদি পানীয় পান করতে পারবেন তবে ক্রিম, ক্রিমজাতীয় খাবার ও চিনি বর্জন করতে হবে।

ঘরোয়া পদ্ধতিতে ওজন কমানোর আরেকটি ভালো উপায় হলো মধু খাওয়া। মধু দেহের অতিরিক্ত জমানো চর্বিকে রক্ত চলাচলে পাঠিয়ে শক্তি উত্পাদন করে, যা ব্যবহৃত হয় দেহের স্বাভাবিক কার্যকলাপে। মধু খাওয়া প্রথমে শুরু করতে পারেন অল্প পরিমাণে, যেমন—এক চামচ বা ১০০ গ্রাম, যা হালকা গরম পানিতে মিশিয়ে এর সঙ্গে এক চামচ লেবুর রস দিয়ে খেতে পারেন।

সোর্স – Pixabay

উপরের ধাপগুলো অনুসরণ করে প্রতি সপ্তাহে ওজন নোট করুন। লক্ষ্য করুন ওজন কমছে কি-না। ধাপগুলো ঠিকমতো অনুসরণ করলে ওজন কমা উচিত। তবে প্রথম সপ্তাহে তেমন পরিবর্তন না দেখা গেলে হতাশ হওয়ার কিছু নাই। চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। হাঁটার সময় কিছুটা বাড়িয়ে দিতে পারেন। জাঙ্ক খাবার পুরোপুরি পরিহার করুন। প্রয়োজনে খাবার-দাবারে সামান্য পরিবর্তন আনতে হতে পারে। তাছাড়া ওজন কমানো মানে ধীরে ধীরে কমাতে হবে । সপ্তাহে ৪-৫ কেজি ওজন কমানোর কথা মাথায় রাখা যাবে না, এটা ক্ষতিকরও বটে। সপ্তাহে ১-২ পাউন্ড ওজন কমলেই যথেষ্ট। এভাবে মাসে বড়জোর ৪-৬ পাউন্ড ওজন কমানোর কথা মাথায় রাখতে পারেন, যদিও ব্যক্তিবিশেষে কিছু কম-বেশী হতে পারে।


ডা: মো: আসলাম হোসাইন – (DMF) DHAKA.


নবীনতর পূর্বতন